খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার মাহবুবনগর এলাকায় ভয়াবহ এক বাস দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৯ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। শান্তি পরিবহনের একটি নৈশকোচ মঙ্গলবার (২৪ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বাসটি রাজধানী ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে সোমবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে এবং গন্তব্য ছিল খাগড়াছড়ি শহর। যাত্রীদের অভিযোগ, চালকের ঘুম ও বেপরোয়া গতি ছিল দুর্ঘটনার মূল কারণ। পুলিশ জানিয়েছে, চালক বর্তমানে পলাতক এবং দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে।
আহত যাত্রী খোরশেদ আলম বলেন, “আমি সিটে আধাঘুমে ছিলাম। হঠাৎ বাসটা হেলতে হেলতে এক পাশে চলে যায়, তারপরই প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে খাদে পড়ে যায়। চোখ খুলে দেখি সবাই চিৎকার করছে, রক্তাক্ত কয়েকজন পড়ে আছে।”
একই অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন যাত্রী মো. ইব্রাহিম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “চালক শুরু থেকেই বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মুন্সিগঞ্জ পার হওয়ার সময় ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে, কিন্তু তখনো থামেনি বা গতি কমাননি। আমরা চালককে অনেকবার সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি।”
দুর্ঘটনার পরপরই মাহবুবনগরের স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং আহতদের উদ্ধার শুরু করেন। পরে পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন।
রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন বলেন, “খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করি। বাসটিকে খাদ থেকে উদ্ধার করে পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। চালক পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাংলাদেশে নৈশকোচ দুর্ঘটনা নতুন নয়। বিগত কয়েক বছর ধরেই চালকের ক্লান্তি, রাতজাগা ডিউটি এবং গাফিলতিতে এমন দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। মাহবুবনগরের এই দুর্ঘটনাও সেই দীর্ঘ তালিকায় আরেকটি সংযোজন।