স্টাফ রিপোর্টার
, যশোর
যশোরের বেশকিছু শিল্পীর দল গঠন করে বিদেশে অনুষ্ঠান করার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি অভিযোগটি করেছেন বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী যশোরের বেজপাড়া বনানী রোডের বৈদ্যনাথ অধিকারীর স্ত্রী স্মৃতিকণা পাল (৪৭)।
অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আছাদুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্ত করে ২০২৬ সালের ২০ জানুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য যশোর পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন, যশোরের কেশবপুর উপজেলার মধ্যকুল রোডের এইচ ৫৬৯ নম্বর বিল্ডিংয়ের নিচতলার বাসিন্দা বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাসের ছেলে বিলাস কুমার বিশ্বাস (৩৬), চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মুকুন্দমার গ্রামের তপন চন্দ্র রায়ের ছেলে রূপক চন্দ্র রায় (৩৭) এবং লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার হাজারীপাড়া ইউনিয়নের তিনাগাছি শিবপুর মসজিদআলা বাড়ির আব্দুর রবের ছেলে ফারুক গাজী (৪৫)।
স্মৃতিকণা পাল পিটিশনে উল্লেখ করেছেন, তিনি বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী। সে কারণে ঝিনাইদহের সাগরিকা সাহা নামে এক শিল্পীর সাথে তার সখ্য গড়ে ওঠে। সাগরিকা তাকে জানায়, আসামিদের সাথে তার সম্পর্ক আছে। তারা বিভিন্ন দল গঠন করে শিল্পীদের বিদেশে নিয়ে যেয়ে শো করায়। আসামিরা তার সাথে যোগাযোগ করে প্রস্তাব দেয়-তারা একটি গ্রুপ তৈরি করবে। ওই গ্রুপের মধ্যে শিল্পী, আবৃত্তিকার, নৃত্যশিল্পী ও যন্ত্রী থাকবে। ওই গ্রুপ ভারত, নরওয়ে, ফ্রান্স, কানাডা ও সৌদিআরবে অনুষ্ঠান করবে।
তিনি যশোর, ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৪৩ জনের সাথে কথা বলেন এবং তাদের একটি নামের তালিকা আসামিদের কাছে পাঠান। আসামিরা ওই ৪৩ জনের মধ্যে ৩২ জনকে মনোনীত করে। যাদের মধ্যে যশোরের মৌরাণী বসু, বৈদ্যনাথ অধিকারী, রাধেশ্যাম পাল, সুমন আচার্য, শাহরিন সুলতানা নিশি, উপমা রানী সাহা, কাজী শাহেদ নেওয়াজ, অতনু অধিকারী, প্রসেনজিৎ ব্যানার্জি, সুকুমার আইচ, মিতা আক্তার, নামিরা নেওয়ার ওয়ারিদ্র, রাফিয়াত নাসির কথা, জান্নাতুল নাইমা সোনিয়া, দিপু মন্ডল, প্রদীপ কুমার সরকার, ঢাকার সোমা দাস, তিথি দে, জন সুমিত, দেউলী দুলাল, সাজু দেব, সাইফুল ইসলাম সাকি, রুমা চট্টগ্রামের অর্ণব আচার্য, ঋতু বড়ুয়া, শুভাশিস দত্ত তন্ময়, দেবাশীষ চৌধুরী, সৃজন রায়সহ অনেকে আছেন।
কিছুদিন পর পাসপোর্ট চাইলে তিনি ওই ৩২ জনের পাসপোর্টের ফটোকপি ও অন্যান্য কাগজপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ও ইমো নাম্বারে পাঠিয়ে দেন। এরপর ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য টাকা চাওয়া হয়। তিনি শিল্পীদের কাছ থেকে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে ৩১ আগস্ট এর মধ্যে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯০০ টাকা আসামি রূপক চন্দ্র রায়ের ব্যাংক এশিয়ার অ্যাকাউন্ট নাম্বারে পাঠিয়ে দেন।
এরপর থেকে তিনি আসামিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। কিছুদিন পর আসামিরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তাদের বিদেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তারা নানা তালবাহানা করে।
গত ৫ ডিসেম্বর আসামি বিলাস কুমার বিশ্বাস যশোরে এলে তিনি তার সাথে দেখা করে সাক্ষীদের সামনে টাকা ফেরত চান। তিনি টাকা ফেরত দেবেন না এবং বিদেশেও নিয়ে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে জানান। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে মামলাটি করেন।