স্টাফ রিপোর্টার
, যশোর
এনজিওতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সাড়ে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেত্রী বহুল আলোচিত মাহমুদা জামানের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে দুটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) যশোর শহরের ঘোপ জেল রোড এলাকার ইমরান সিকদারের স্ত্রী তানজিনা রহমান ও শহরতলীর শেখহাটি এলাকার ইকবাল হোসেনের মেয়ে ইন্নাতুল হাসান মামলা দুটি করেছেন।
সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমিন অভিযোগ দুটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্যে কোতোয়ালি থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন। মাহমুদা জামান যশোর সদরের বসুন্দিয়া মোড় এলাকার ডাক্তার মুনসুর আলীর মেয়ে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তিনি এখন আওয়ামী ভোল পাল্টিয়ে আরেকটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে বহালতবিয়তে রয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ইন্নাতুল হাসান যশোরের কুইন্স হসপিটালে চাকরি করেন। আসামি মাহমুদা জামান অসুস্থ হয়ে কুইন্স হসপিটালে ভর্তি হন। তখন তাদের পরিচয় হয়। একপর্যায় ইন্নাতুল হাসানকে বেশি বেতনে একটি এনজিওতে চাকরির প্রলোভন দেখান মাহমুদা। আর ওই চাকরি পাইয়ে দিতে তাকে চার লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুস দিতে হবে বলে জানান। চলতি বছরের ১২ এপ্রিল চাকরি পাওয়ার আশায় চার লাখ ৮০ হাজার টাকা দেন মাহমুদাকে। চাকরি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। গত ২ ডিসেম্বর বিকেলে কুইন্স হসপিটালের সামনে মাহমুদার দেখা হলে টাকা ফেরত চান ইন্নাতুল হাসান। তখন টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন মাহমুদা। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
অপরদিকে, তানজিনা রহমানও কুইন্স হসপিটালে চাকরি করেন। তারও পরিচয় হয় হাসপাতালে। তাকেও একই প্রলোভন দেখিয়ে আট লাখ টাকা চান মাহমুদা। প্রলোভনে পড়ে রাজি হয়ে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল মাহমুদাকে সাত লাখ ৬০ হাজার টাকা দেন তানজিনা রহমান। কিন্তু তার চাকরিও হয়নি। এরমধ্যে তানজিনাকে দিয়ে মাহমুদা প্রতারণার মাধ্যমে একটি কোম্পানিতে ইন্সুরেন্স করিয়ে দেন। সেখানে তানজিনা ৫০ হাজার টাকা জমা দিলেও ২৫ হাজার টাকার একটি টেক্সট মোবাইলে পাঠান মাহমুদা।
গত ২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার দিকে মাহমুদা কুইন্স হসপিটালে যান। এসময় চাকরির জন্য দেওয়া টাকা ফেরত চাইলে দিতে অস্বীকার করেন মাহমুদা। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিনিও আদালতে মামলা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মাহমুদার নাম শুনলে অনেকেই আতংকের মধ্যে থাকেন। গত ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি নৌকা মার্কায় সাধারণ আসন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি প্রার্থী হওয়ার জন্য দুইবার করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে সুচতুর মাহমুদা ভোল পাল্টে বিপরীত মেরুর একটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সাথে তাল মিলিয়ে এলাকায় বহালতবিয়তে রয়েছেন।