ঝিনাইদহ সংবাদদাতা
একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের অভিযোগে ঝিনাইদহে নজরুল ইসলাম (৪৯) নামে একজন কলেজ শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গত বুধবার (০৩ ডিসিম্বর) ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অন্তত ১৬ জন ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর ভিত্তিতে কলেজ কৃর্তপক্ষ জরুরি সভা করে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম (৪৯) ঝিনাইদহ সদর উপজেলার এমএ খালেক মহাবিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক। কলেজের অধ্যক্ষ ওলিয়ার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এমএ খালেক মহাবিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক নজরুল ইসলাম ছাত্রীদের উত্যক্ত করে আসছিলেন। মোবাইল ফোনে আপত্তিকর মেসেজ দিয়ে বিরক্ত করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ ও মেসেজ প্রদানের ঘটনাটি এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে জানাজানি হয়ে যায়। পরে কলেজের একাধিক ছাত্রী শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমি নজরুল স্যারকে অনেক সম্মান করতাম। তিনি আমাদের শিক্ষক। কিন্তু তিনি মোবাইল ফোনে নানাভাবে আপত্তিকর (অ্যাডাল্ট) মেসেজ দিতেন। রিপ্লাই না করলে, সরাসরি দেখা হলে নানাভাবে আপত্তিকর কথা বলতেন।
একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে তিনি গুরুতর যৌন নিপীড়নের মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। অভিযোগকারীরা শিক্ষক নজরুল ইসলামের শাস্তি দাবি করেন। তিনি শিক্ষকতার মতো মহান পেশাকে কলঙ্কিত করেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ ওলিয়ার রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি আমলে নিয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে আমরা সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছি। গুরুতর অভিযোগ হওয়ায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।’
অভিযুক্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মোবাইল ফোনটি হ্যাক হয়েছে। যে কারণে এরকম মেসেজ ছাত্রীদের কাছে চলে গিয়েছে।’ দীর্ঘ ৪/৫ মাস ধরে মোবাইল ফোন হ্যাক হয়ে থাকে কীভাবে, এমন প্রশ্ন করলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনে আরা বলেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে এ বিষয়ে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর। কলেজ অধ্যক্ষকে লিখিত অভিযোগের কপি ইউএনও অফিসে জমা দিতে বলেছি। লিখিত অভিযোগ হাতে পাওয়ামাত্রই আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’