সুবর্ণভূমি ডেস্ক
শরীফ ওসমান হাদি হত্যার সাথে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভারতের খালিস্তান আন্দোলনে যুক্ত শিখরা। একইসাথে তাদের দাবি হারদীপ সিং নিজ্জর হত্যার সাথেও ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভের পাল্টা কর্মসূচি চলাকালে শিখরা এই অভিযোগ তোলেন। কর্মসূচি চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে লন্ডন পুলিশ দুই পক্ষকে নিবৃত করে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। তবে, ভারতের খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকরাপন্থি শিখরা ফের সেখানে মানবপ্রাচির তৈরি করে ভারত সরকার ও হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর সহিংসতার অভিযোগ এনে এদিন বিক্ষোভের আয়োজন করে ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীরা। একই সময়ে সেখানে কর্মসূচির আয়োজন করে শিখ সম্প্রদায়ের সদস্য ও খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকরা। এসময় হিন্দুত্ববাদীদের বিক্ষোভের পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন শিখরা।
এক পর্যায়ে খালিস্তান আন্দোলনের নেতা পরমজিৎ সিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় এক হিন্দুত্ববাদী বিক্ষোভকারীর বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশের সদস্যরা হস্তক্ষেপ করে উভয় পক্ষকে আলাদা করেন এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের আশপাশের এলাকা থেকে সরিয়ে দেন।
এরপরও খালিস্তানপন্থি শিখ বিক্ষোভকারীরা হাইকমিশনের প্রবেশপথের কাছে মানববলয় গড়ে তুলে কর্মসূচি চালিয়ে যান।
এ সময় তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দেন এবং বাংলাদেশের শহীদ ওসমান হাদি ও হারদীপ সিং নিজ্জরসহ কয়েকজনের হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তোলেন।
ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী জুলাই বিপ্লবী ওসমান হাদিকে গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার রাস্তায় প্রকাশ্যে গুলি করে দুই সন্ত্রাসী। এরপর তারা ভারতে পালিয়ে যায় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওসমান হাদির রাজনৈতিক সতীর্থদের অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডে পতিত শক্তি আওয়ামী লীগ ও তাদের আশ্রয়দাতা ভারতের হাত আছে।
খালিস্তান আন্দোলন কী
১৯৮০ সালে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ ঘিরে শিখদের একটি অংশ স্বাধীন ‘খালিস্তান’ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি তোলে। ওই আন্দোলনকে ‘খালিস্তান মুভমেন্ট’ বলা হয়। আন্দোলনটির জের ধরে অনেক সহিংসতা হয়েছিল এবং মৃত্যু হয়েছিলো হাজারো মানুষের। ভারতীয় সেনাবাহিনীর নৃশংস অভিযানের পর এ আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায়।
এই আন্দোলনে জড়িতদের ভারত ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেয় এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে।
বর্তমানে ভারতে সেভাবে সংগঠিত হতে না পারলেও শিখরা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ‘খালিস্তান’ প্রতিষ্ঠার পক্ষে প্রচারণায় সক্রিয়।