চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
ভারতের উড়িষ্যার একই পরিবারের ১৪ জনকে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতের আধারে সীমান্তে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে বিএসএফ। তাদের ঠাই হয়েছে খোলা আকাশে নিচে। পরে খবর পেয়ে শীত নিবারনের জন্য শীতবস্ত্র দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি প্রক্রিয়ায় করণীয় বিষয় ভাবছে বিজিবি ও পুলিশ।
জানাগেছে, ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের জগসিং জেলার সাতকুড়া ধনিপুরে ৭০ বছর যাবৎ স্বপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন হারুন অর রশিদের ছেলে আব্দুর জব্বার (৭৩)। মাস খানেক আগে এক গভীর রাতে সেখানকার থানা পুলিশ জব্বারসহ তার পরিবারের ১৪ সদস্যকে ধরে নিয়ে যায়।
আটগড় জেলখানায় এক মাস হাজত বাস শেষে বৃহস্পতিবার মুক্তি পান সকলে। ওই দিন রাত ৩টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা ওই ১৪ জনকে ভারতীয় সীমান্তে জোর করে ঠেলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
অনুপ্রবেশকারীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী তাদের দর্শনা নিমতলা সীমান্ত পথে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার ফজরের আজানের পর তারা অবস্থান নেন দর্শনা বাসস্ট্যান্ড টার্মিনালে।
দিন গড়ালেও তেমন সাড়া পড়েনি। তবে রাত হওয়ার সাথে সাথে ঘটনাটি জানাজানি হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ ও বিজিবি।
জব্বার জানান, আড়াই বছর বয়সে বাবা মায়ের হাত ধরে উড়িষ্যায় বসবাস শুরু হয় তার। সেখানেই বিয়ে ও সংসার শুরু করেন। বাংলাদেশে কোন জেলাতে তাদের বাড়ি ছিলো তার কিছুই জানেন না তিনি।
ভারতে বসবাসকারীদের মধ্যে রয়েছেন শেখ আব্দুর জব্বারের ছেলে হাকিম শেখ (৪৮), শেখ উকিল (৪৫), শেখ বান্টি (৩০), শেখ রাজা (৩৮), শেখ জব্বারের স্ত্রী আলকুনি বিবি (৬৫)), শেখ উকিলের স্ত্রী সাগেরা বিবি (৩৬), মেয়ে শাকিলা (৯), শেখ রাজার স্ত্রী মেহরুন বিবি (২৮), মেয়ে নাসরিন (১০), ছেলে রোহিত (২) তৈহিদ (১১), শেখ হাকিমের স্ত্রী শমশেরি বিবি (৩৪) ও শেখ হোসেনের স্ত্রী গুলশান বিবি (৮০)।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, সঠিক তদন্তপূর্বক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ পেয়ে তাদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক তানভির রহমান অনিক ও যুগ্মআহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম সোহান। তারা বর্তমানে সেখানেই অবস্থান করছে।