হাফিজুল নিলু
, নড়াইল
নড়াইল সদরের গোবরা সড়কে যেতেই চোখে পড়ে কাড়ার বিলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। মাঠজুড়েই হলুদের সমারোহ। শর্ষেফুলের ঝলমলে হাসিতে রঙিন হয়ে উঠেছে ফসলের মাঠ। শীতের সোনাঝরা রোদে চিকচিক করছে হলুদবরণে সেজে উঠা শর্ষেক্ষেত। সেই সাথে মৌমাছির গুনগুন শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে চারিপাশ। মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ ফুলে ভরা গাছ। আর ফুলের ফাঁকে ফাঁকে ফলের আভাস; তাতেই তৃপ্তির হাসি কৃষকের মুখে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৩ হাজার ৪৮৭ হেক্টর জমিতে শর্ষের আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ২৮৬ মেট্রিক টন। আমন কাটার পর জমি পরিত্যক্ত থাকে। আর সেই জমিতেই কৃষকরা হিসেবে শর্ষে চাষ করেন।
ধোপাখোলা গ্রামের চাষি নৃপেন কার্তিক রায় বলেন, ‘দুই একর জমিতে চলতি মৌসুমে রিলে পদ্ধতিতে শর্ষে চাষ করেছি। ফুলে ফুলে ভরে গেছে ক্ষেত। গাছে পরিপক্ব হয়েছে শর্ষে। এখন ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি।’
নুনখির গ্রামের সুজিত বলেন, ‘কৃষি অফিসের পরামর্শে আমন ধানের সাথে রিলে পদ্ধতিতে শর্ষে চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন হবে।’
মুশুড়িয়া গ্রামের চাষি রিন্টু বিশ্বাস বলেন, ‘এক একর জমিতে এ বছর শর্ষে চাষ করেছি। ফুল দেখে মনে হচ্ছে, ফলন ভালো হবে। আশা করছি, নিজের চাহিদা পূরণ করে বাজারে বিক্রি করতে পারবো।’
গোবরা কাঁকড়ার বিলে শর্ষেফুলের অপরূপ সৌন্দর্য আর মৌমাছির গুনগুনানি উপভোগ করতে বন্ধুদের নিয়ে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। কেউ ছবি তুলছেন। কেউবা মোবাইলফোনে ধারন করছেন হলদে বর্ণে সেজে উঠা শর্ষে ফুলের মাঠ।’
শর্ষেক্ষেতে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছিলেন এক দল তরুণ। তাদের মধ্যে কৃপা বিশ্বাস নামে এক তরুণ বলেন, ‘রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। মাঠভরা শর্ষেফুল দেখে ভিডিও করছি। বন্ধুদের নিয়ে শর্ষেক্ষেত দেখতে বেশ ভালো লাগছে।’
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘রিলে পদ্ধতিতে শর্ষে চাষে কৃষি অফিস থেকে কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যেসব জমিতে বছরে দুটি ফসল হতো, সেখানে রিলে পদ্ধতিতে আমন ধানের সাথে শর্ষে চাষ করে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করা হয়েছে। এতে করে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।’